ল্যাপটপ না ডেস্কটপ কম্পিউটার কিনবেন? কোনটি ভালো? Tech Shikun- টেক শিখুন

দুটোরই কাজ এক হওয়ার লেপটপ, ডেস্কটপ কেনার সময় সমস্যায় পড়তে হয়... লেপটপ কিনব? নাকি ডেস্কটপ কিনব... Tech Shikun- টেক শিখুন...
ল্যাপটপ না ডেস্কটপ কম্পিউটার কিনবেন।

ল্যাপটপ না ডেস্কটপ কম্পিউটার কিনবেন? কোনটি ভালো? সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না? Tech Shikun- টেক শিখুন আছে আপনার পাশে।

এখনকার বাজারে ল্যাপটপ এবং কম্পিউটার ডেক্সটপ দুটোই পাওয়া যায়, আবার এদের কাজও একই। লেপটপ দিয়ে যে কাজ যায়, কম্পিউটার বা ডেস্কটপ দিয়েও সেই একই কাজ করা যায়। এদের কাজ এক হওয়ার কারণে লেপটপ বা ডেস্কটপ কেনার সময় আমাদের প্রায়ই সবাইকে কমন একটি সমস্যায় পড়তে হয়। আর এই কমন সমস্যাটি হলো দুটোর মধ্যে কোনটি কিনব! লেপটপ কিনব? নাকি ডেস্কটপ কিনব?

একএকজনের ক্ষেত্রে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার ডেস্কটপের ব্যাপারটি আলাদা আলাদাভাবে ভেরি করে। তবে দুটির মধ্যে কোনটি কিনবেন এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া কিন্তু মোটেই সহজ নয়। তাই বলে আপনি ল্যাপটপ নাকি ডেক্সটপ কিনবেন তা বের করা কিন্তু অসম্ভব কিছু না। শুধুমাত্র কয়েকটি ব্যাপার ভেবে দেখলেই কিন্তু ব্যাপারটি অনেক সহজ হয়ে যায়।

আরো পড়ুনঃ কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর কিছু উপায়

আপনি প্রথমত সিদ্ধান্ত নিন আপনার জন্য ল্যাপটপ ভালো হবে নাকি ডেক্সটপ ভালো হবে। তারপর নিচের বিষয়গুলো নিয়ে মনোযোগ সহকারে পড়ুন ও কিছুক্ষন ভাবুন তাহলেই আশা করি আপনি আপনার সিদ্ধান্তে পৌছে যাবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক--

১। ল্যাপটপ যে কারণে কিনবেন; এর সুবিধাসমূহঃ-

পোর্টেবিলিটিঃ  লেপটপের এটিই একটিমাত্র গুন যা ডেস্কটপ থেকে লেপটপকে শতগুণে এগিয়ে রাখে। বর্তমানের বিশ্বের ব্যস্ত জীবনে পোর্টেবিলিটি মারাত্মক একটি জিনিস। অফিসের কাজে বা বাড়ির কাজই হোক কিংবা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যাপটপ এর প্রয়োজনীয়তা হয় সবার আগে। তা আপনার যদি পোর্টেবিলিটির প্রয়োজন হয় তাহলে অন্য কোনো চিন্তাভাবনা না করে ল্যাপটপই কিনে ফেলুন।

কম্ফোর্টিবিলিটিঃ কম্ফোর্টিবিলিটি হলো ল্যাপটপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অন্যরকম একটি মজা। লেপটপ পোর্টেবল হওয়ায় আপনি খুব সহজেই লেপটপকে বিছানায়, টেবিলে, বাসে কিংবা মাঠে ঘাটে এক কথায় আপনার যেখানেই প্রয়োজন সেখানেই লেপটপটি খুলে ব্যাবহার করতে পারবেন। এতে মোটেও আপনার কোন অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে না। তাই কম্ফোর্টিবিলিটির দিক থেকেও নিঃসন্দেহে ল্যাপটপ ডেস্কটপের থেকে অনেক এগিয়ে।

পাওয়ার ব্যাকআপঃ পৃথিবীতে যত ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস আছে সকল ডিভাসের মূল চালিকা শক্তি হলো বিদ্যুৎ। তবে বাংলাদেশে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় প্রায়ই দেখা যায় যে, কাজের সময় বিদ্যুৎ থাকে না। যার ফলে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। যেকোনো জরুরী কাজ করাটাও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যদি লেপটপ থাকে তাহলে কিন্তু লোডশেডিং নিয়ে তেমন মাথা ঘামানো লাগেনা। কারন, ল্যাপটপের সাথে অলরেডি পাওয়ার ব্যাকআপ যুক্ত থাকে। যা কোন প্রকার বাধাহীনভাবে দুই থেকে তিন ঘণ্টা বা তারও বেশি সময়ের জন্য কাজ করার সুযোগ করে দেয়।

ত যাইহোক পাঠক এতক্ষন জানলেন লেপটপের সুবিধাসমূহ। কিন্তু এর সুবিদার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও আছে, চলুন লেপটপের সেই অসুবিধা বা সীমাবদ্ধতাগুলো কি কি জেনে নেওয়া যাক।

লেপটপের অসুবিধাসমুহ বা সীমাবদ্ধতাগুলো হলোঃ-

ল্যাপটপে খুব ভারী অর্থাৎ হাই কোয়ালিটিসম্পন্ন কাজগুলো (যেমনঃ ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভলাপিং ইত্যাদি) কাজ করতে গেলে অনেক সময় ল্যাগিং ও আরো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আপনার যদি এরকম ভারি কাজগুলো করার প্রয়োজন হয় তাহলে ল্যাপটপ দিয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারবেন না। তবে একটি উপায় আছে তা হলো, হাই কোয়ালিটির কাজ করতে গেলে যেরকম বাজেটের মধ্যে ডেস্কটপ পাবেন লেপটপের বেলায় ডেস্কটপের দুই-তিনগুন বেশি বাজেট দিয়ে লেপটপ কিনলে প্রায় ওই কাজগুলো করতে পারবেন।

ল্যাপটপকে মোটামুটি এক্সপেন্সিভ বলতে পারেন। কারণ এর দাম ডেক্সটপের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তাই ল্যাপটপ কিনতে হলে আপনাকে অবশ্যই অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হবে।

২। কম্পিউটার ডেক্সটপ যে কারণে কিনবেন; এর সুবিধাসমূহঃ-

সহজলভ্যতাঃ ল্যাপটপের চেয়ে ডেস্কটপ এর দাম তুলনামূলক অনেক কম। মোটামুটি মানের বাজেট হলেই ভালো একটি ডেস্কটপ কেনা সম্ভব। দাম অনেক কম হওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত সবারই ডেস্কটপ কেনার ক্ষমতা রয়েছে। তাই অর্থ বাঁচাতে চাইলে লেপটপ থেকে ডেক্সটপই সেরা অপশন।

আরো পড়ুনঃ দ্রুত মোবাইল চার্জ দেওয়ার ৫টি সঠিক পদ্ধতি!

হাইপারফরমেন্সঃ কম্পিউটার ডেস্কটপের সবচেয়ে ভালো দিক হলো এর পারফরমেন্স। পারফরমেন্সের দিক দিয়ে হিসেব করলে লেপটপ থেকে ডেস্কটপ কয়েকগুন এগিয়ে। কারন, ডেস্কটপ সরাসরি এসি পাওয়ারে চলে, যার কারনে এটি High Performance ডেলিভারি দিতে সক্ষম। ডেক্সটপ দিয়ে আপনি অনায়াসেই বিভিন্ন ভারী কাজ (যেমনঃ ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভলাপিং ইত্যাদি) এরকম যেকোনো ছোট বড় সব কাজই করতে পারবেন। তাই ভালো পারফরমেন্স পেতে চাইলে ডেক্সটপ কেনাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

আপগ্রেডেবলঃ আপগ্রেডিবিলিটি হলো ডেক্সটপের সবচেয়ে বড় সুবিধা। আপনার ডেস্কটপের কনফিগারেশন অনুযায়ী খুব সহজেই আপনি একে আপগ্রেড করে নিতে পারবেন। যেকোনো পার্টস খুব সহজেই আপগ্রেড করে নিতে পারবেন অনায়াসেই। পাশাপাশি সময়ের সাথে সাথে আপনার ডেস্কটপটিকে কাজের উপযোগী করে নিতে পারবেন। যার ফলে আপনার অর্থ ও সময় দুটোই বাঁচবে। কিন্তু ল্যাপটপের ক্ষেত্রে এই সুবিধা ভোগ করা কখনোই সম্ভব নয়।

এতক্ষন জানলেন ডেক্সটপের সুবিধাসমূহ। কিন্তু এর সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও আছে, চলুন ডেক্সটপের সেই অসুবিধাগুলো কি কি জেনে নেওয়া যাক!

কম্পিউটার ডেক্সটপের অসুবিধাসমুহ ও সীমাবদ্ধতাগুলো হলোঃ-

ডেক্সটপের প্রধান সীমাবদ্ধতা হল এর পোর্টেবিলিটি নেই। ডেক্সটপ দিয়ে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। আপনি ইচ্ছে করলেও কাজের প্রয়োজনে একে ল্যাপটপের মতো খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে পারবেন না। ল্যাপটপ যেভাবে ইচ্ছেমতো যেখোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন, সেভাবে ডেক্সটপ ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই।

যেকোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। তেমনিভাবে ডেক্সটপও বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় কোন কারণে বিদ্যুৎ না থাকলে কম্পিউটারটি ব্যবহার করতে পারবেন না। যার ফলে অনেক কাজ করতে গিয়ে বাধাগ্রস্ত হতে পারেন। তবে ইদানিং আইপিএস ও ইউপিএস এর মাধ্যমে এ সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে। এই ব্যাপারে লেপটপের কথা চিন্তা করলে কিন্তু কোনো ধরনের আইপিএস বা ইউপিএস প্রয়োজন হয়না।

তা বন্ধুরা সব কিছু জেনে বুজা গেল ল্যাপটপের যেমন সুবিধা ও অসুবিধা আছে, তেমনিভাবে ডেক্সটপ এরও সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি লেপটপ কিনবেন নাকি ডেস্কটপ কিনবেন। তবে এজন্য আপনি কি চান? তার উপর নির্ভর করবে আপনি কি কিনবেন।

তবে আমার পরামর্শ হলো আপনি যদি খুব ট্রাভেল করেন বা আপনার ডিভাইসটিকে এখানে সেখানে নিয়ে যেতে হয় তাহলে ল্যাপটপের বিকল্প অন্য কোনো ডিভাইস হবে না। তবে পোর্টেবিলিটির প্রয়োজন না হলে আপনি ডেক্সটপ কেনার দিকে নিজেকে সুইচ করতে পারেন। সবকিছুই মূলত নির্ভর করবে আপনার সিদ্ধান্তের উপর। এজন্য আপনার বর্তমান ও ভবিষ্যতের কথা ভেবে একটি সুদূরপ্রসারি সিদ্ধান্ত নিন। যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন সাথে বাজেটের দিকেও ফোকাস করবেন।


ধন্যবাদ আমাদের Tech Shikun- টেক শিখুন ব্লগের সাথে থাকার জন্য। নিয়মিত টেকনোলজি বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন আশা করি। আর হ্যাঁ আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

2 মন্তব্যসমূহ

এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে কেমন লেগেছে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন, ধন্যবাদ।

  1. উত্তরগুলি
    1. ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
      আমাদের 'Tech Shikun- টেক শিখুন' ব্লগের সাথেই থাকুন।

      মুছুন
নবীনতর পূর্বতন