কম্পিউটার ও লেপটপের ২৮টি কিবোর্ড শর্টকাট কি | 30 Keyboard Shortcut Key for Computer and Laptop- Tech Shikun টেক শিখুন

tech tips,computer shortcut keys,computer,Tech Shikun,computer tips,কম্পিউটার কিবোর্ড,keyboard shortcut keys,keyboard shortcut,computer keyboards,
কম্পিউটার ও লেপটপের ২৮টি কিবোর্ড শর্টকাট কি

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালোই আছেন। আজ আমি আমার এই Tech Shikun- টেক শিখুন ব্লগে আপনাদের সাথে আলোচনা করব কম্পিউটার বা লেপটপ কীবোর্ডের (Keyboard) ৩০টি শর্টকাট কি (Shortcut Key) নিয়ে, যা আপনাদের কম্পিউটার বা লেপটপ ব্যবহারের জন্য জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরী। তাহলে চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

কম্পিউটার বা লেপটপ ব্যবহারের জন্য কিবোর্ডের ভূমিকা অপরিসীম। কীবোর্ড ছাড়া কম্পিউটার বা লেপটপ ব্যবহার করা কখনোই সম্ভব না। আমাদেরকে প্রতিদিন কিবোর্ড দিয়ে বিভিন্ন টাইপিং এর কাজ করতে হয়। তবে আমরা সবাই টাইপিং এর কাজ সবাই জানলেও অনেকেই কিবোর্ডের শর্টকাটসমূহ সম্পর্কে জানিনা। কিবোর্ড আমাদের অনেক কাজকে খুব সহজ করে দিতে পারে যদি আমরা কিবোর্ড শর্টকাটসমূহ সম্পর্কে জানি। কিবোর্ড শর্টকাট হলো কিবোর্ডের একাধিক কি একইসাথে চেপে নির্দিষ্ট কোনো কমান্ড দেয়া।

এবার জেনে নেওয়া যাক ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ উইন্ডোজ কিবোর্ড শর্টকাট কি সম্পর্কে, যা আপনার কম্পিউটার ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে আরো দ্রুত ও কার্যকর করে তুলবে।

১। Win + A: এটি চাপলে কম্পিউটারে 'অ্যাকশন সেন্টার' ওপেন হয়। তবে টাচস্ক্রিন উইন্ডোজ এর ক্ষেত্রে স্ক্রিনের ডানদিক থেকে সোয়াইপ করলে খুব সহজেই 'অ্যাকশন সেন্টার' ওপেন করা যায়। কিন্তু যেসব উইন্ডোজ ডিভাইসে টাচস্ক্রিন সুবিধা নেই, সেসব ডিভাইসে Windows Key + A একসাথে চাপলেই অ্যাকশন সেন্টার ওপেন হয়।

২। Win + D: অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ ফাইল কিংবা অ্যাপ কম্পিউটারের ডেস্কটপেই রাখতে পছন্দ করেন। যেকোনো স্ক্রিন থেকে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন প্রয়োজনে সরাসরি ডেস্কটপ স্ক্রিনে যাওয়ার প্রয়োজন পরে। যেকোনো অ্যাপ বা স্ক্রিন থেকে সরাসরি ডেস্কটপ স্ক্রিনে প্রবেশ করতে Windows Key + D কি চাপতে হবে।

৩। Win + E: এটি হলো উইন্ডোজ 'ফাইল এক্সপ্লোরার (File Explorer)' কিবোর্ড শর্টকাট। অনেকেই 'ফাইল এক্সপ্লোরার' কে সহজে খুজে পেতে একে ডেস্কটপে রেখে থাকেন। আবার কেউ কেউ টাস্কবারেও রাখেন। তবে উইন্ডোজ ফাইল এক্সপ্লোরার কিবোর্ড শর্টকাট ব্যবহার করেও ওপেন করা যায়। উইন্ডোজ এক্সপ্লোরার ওপেন করতে Windows Key + E কি একসাথে চাপতে হবে।

৪। Win + H: এটি চাপলে উইন্ডোজ এর ডিকটেশন ফিচারটি চালু হয়। এটি মুলত 'স্পিচ টু টেক্সট কনভার্টার'। অর্থাৎ ডিকটেশন ফিচার ওপেন করার পর আপনি যা বলবেন তা টেক্সট অর্থাৎ লেখা হিসেবে দেখতে পাবেন। যারা ভয়েস টাইপিং করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য এই শর্টকাট খুব কাজে আসতে পারে। ডিকটেশন ফিচার ওপেন করতে Windows Key + H কি একসাথে চাপতে হবে।

৫। Win + I: সাধারন নিয়মে উইন্ডোজ এর 'সেটিংস (Settings)' এ প্রবেশ করতে প্রথমে স্টার্ট ও পরে সেটিংস এ ক্লিক করতে হয়। কিন্তু ডেস্কটপ বা যেকোনো স্ক্রিন অথবা অ্যাপ থেকে সরাসরি সেটিংসে প্রবেশ করতে Windows Key + I কি একসাথে চাপতে হবে।

আরো পড়ুনঃ কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর কিছু উপায়

৬। Win + L: এটি আপনার পিসির স্ক্রিন লক করে দেবে। ফলে পিসি আবার ব্যবহার করতে চাইলে পাসওয়ার্ড এন্টার করে আনলক করে নিতে হবে। পাসওয়ার্ড আগে থেকে দেয়া না থাকলে শুধু সাইন-ইন বাটনে ক্লিক করে এন্টার দিলেই হবে। খুব সহজে কম্পিউটার লক করতে Windows Key + L কি একসাথে চাপতে হবে।

৭। Win + S: কম্পিউটারে রাখা যেকোনো প্রোগ্রাম বা ফাইল খুঁজতে আমরা প্রায় সবাই উইন্ডোজের সার্চ ফিচারটি ব্যবহার করে থাকি৷ কিন্তু খুব সহজে শর্টকাটভাবে উইন্ডোজ সার্চ ফিচার ওপেন করতে Windows Key + S কি একসাথে চাপতে হবে।

৮। Win + V: এটি হলো কম্পিউটারের ক্লিপবোর্ড কিবোর্ড শর্টকাট। কম্পিউটারের আমরা যত টেক্সট, ছবি বা স্ক্রিনশট কপি(Copy) করি, তার সবই 'ক্লিপবোর্ড (Clipboard)' এ সংরক্ষিত থাকে। কপি করা জিনিস কোনো জায়গায় 'পেষ্ট (Paste)' করতে Windows Key + V কি একসাথে চাপতে হবে।

৯। Win + X: পাওয়ারশেল (Powershell), সিএমডি (CMD) ইত্যাদির মত উইন্ডোজ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচার Windows Key + X কি একসাথে চেপে খুব সহজেই অ্যাকসেস করা যাবে।

১০। Win + Number Key: আমরা আমাদের কম্পিউটারের টাস্কবারে যেসব অ্যাপ পিন করে রাখি, সেগুলো ওপেন করতে হলে সাধারণত ক্লিক করে ওপেন করতে হয়। কিন্তু এসব অ্যাপগুলো কিবোর্ডের শর্টকাট কি ব্যবহার করে খুব সহজেই ওপেন করা যায়। টাস্কবারে থাকা অ্যাপগুলোর ক্রমঅনুসারে Windows Key Number Key একসাথে চাপলে অ্যাপ ওপেন করা যায়। ধরুন, টাস্কবারে পিন করা প্রথম অ্যাপটি হলো Google Chrome। তাহলে Windows Key + 1 কি একসাথে চাপলে গুগল ক্রোম ওপেন হবে। একইভাবে টাস্কবারের চতুর্থ অ্যাপটি যদি হয় এক্সপ্লোরার এর, তাহলে Windows Key + 4 কি চেপে এক্সপ্লোরার ওপেন করা যাবে।

১১। Win + . (Full Stop Key): অনেকেই চ্যাট এর ক্ষেত্রে ইমোজি ব্যবহার পছন্দ করেন। তবে কম্পিউটারে চ্যাট করার সময় এই ইমোজি খোজা বিশাল সমস্যার ব্যাপার। ভালো খবর হলো উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমেই বিল্ট-ইন ইমোজি রয়েছে। ইমোজি প্যানেল ওপেন করতে Windows Key + ফুল স্টপ (.) কি একসাথে চাপুন। এরপর ইমোজি প্যানেল ওপেন হলে 'অ্যারো কি(Arrow Key)' কিংবা মাউস এর মাধ্যমে ইমোজি সিলেক্ট করে ব্যবহার করুন।

১২। Win + Left/Right Arrow: একাধিক ওপেন থাকা উইন্ডো (Window) কে খুব সহজেই গ্রিড এর মধ্যে স্ন্যাপ করে গুছানো পদ্ধতিতে উইন্ডোজ ব্যবহার করা যায়। কোনো উইন্ডো গ্রিডে স্ন্যাপ করাতে Windows Key + Left/Right Arrow কি একসাথে চাপুন।

১৩। Ctrl + A: স্ক্রিনে দৃশ্যমান সবকিছু একইসাথে সিলেক্ট করতে কীবোর্ডের Ctrl + A কি একসাথে চাপুন।

১৪। Ctrl + P: ব্রাউজারব আমরা যে সকল ওয়েবপেজ দেখতে পাই, সবগুলোর ক্ষেত্রে কিন্তু প্রিন্ট করার জন্য আলাদা সুবিধা থাকেনা। সেক্ষেত্রে যেকোনো ওয়েবপেজে প্রবেশ করে Ctrl + P কি একসাথে চাপলে উক্ত পেজ প্রিন্ট করার ফিচার পাওয়া যাবে।

১৫। Ctrl + Z: উইন্ডোজ কম্পিউটারে কাজ করার সময় হঠাত ভুলে যদি কোনো ফাইল ডিলিট করে রিসাইকেল বিনে পাঠিয়ে দেন, তাহলে সাথে সাথে Ctrl + Z বাটন একত্রে চাপ দিন। এতে আপনার সেই মুছে যাওয়া ফাইল আগের স্থানে ফিরে আসবে। মাইক্রোসফট অফিস, ব্রাউজার সহ বেশিরভাগ প্রোগ্রামের সাথে (যেখানে ব্যবহারকারীর কিছু লেখা দরকার হয়) এই শর্টকাটটি কাজ করে। এটি মূলত সর্বশেষ সম্পন্ন কাজটিকে আনডু করে দেয়। Ctrl + Z যে কাজ করে, সেটিকে আনডু করতে Ctrl + Y চাপ দিতে পারেন।

১৬। Ctrl + Delete: কোনো ডকুমেন্ট লিখার সময় মাউসের কার্সরটি ডকুমেন্টের যে শব্দের উপর থাকে তার পরে থাকা একটি শব্দ মুছে ফেলতে Ctrl + Delete কি একসাথে চাপতে হবে।

১৭। Ctrl + Tab: ব্রাউজারের ট্যাবসমুহ বাম দিক থেকে ডানদিকে কুইকলি সুইচ করতে Ctrl + Tab কি একসাথে চাপতে হবে।

১৮। Ctrl + Backspace: কোনোকিছু লেখার সময় অক্ষর মুছতে Backspace কি ব্যবহার হয়। কিন্তু মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে কিংবা অন্য যেকোনো প্রোগ্রামে একটি অক্ষরের বদলে একটি শব্দ মুছতে Ctrl + Backspace কি একসাথে চাপতে হবে। এতে মাউসের কার্সরের আগে থাকা একটি শব্দ মুছে যাবে।

১৯। Ctrl + Left/Right Arrow: কোনো লেখা বা ডকুমেন্টে বাম ও ডান অ্যারো ব্যবহার করে লেখার আগে পরে যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে প্রতিবার অ্যারো কি চাপলে একটি করে অক্ষর আগে বা পরে কার্সর নাড়ানো যায়। তবে Ctrl কি ও বাম/ডান অ্যারো কি একসাথে চাপলে প্রতিবারে একটি করে শব্দ আগে বা পরে কার্সর মুভ করা যায়।

২০। Ctrl + Shift + Left/Right Arrow: যেকোনো লেখা সিলেক্ট করতে আমরা মাউস ব্যবহার করে থাকি। তবে Ctrl কি, Shift কি ও ডান/বাম অ্যারো কি চেপে কার্সরের আগে বা পরের লেখা সিলেক্ট করা যায়।

২১। Ctrl + Shift + Up/Down Arrow: কোনো টেক্সট বা ডকুমেন্ট এডিট এর সময় যে প্যারাগ্রাফে কার্সর থাকে, সে প্যারাগ্রাফটি সম্পূর্ণরুপে সিলেক্ট করতে Ctrl কি, Shift কি ও আপ/ডাউন অ্যারো কি ব্যবহার করুন।

২২। Ctrl + Shift + Tab: ব্রাউজারের ট্যাবসমুহ ডান দিক থেকে বামদিকে দ্রুত সুইচ করতে Ctrl + Shift + Tab কি একসাথে চাপুন।

Read More: How to Speed Up Computer or Laptop

২৩। Ctrl + Shift + T: আমরা প্রায়ই ভুল করে ব্রাউজারের ট্যাব ক্লোজ করে দেই। সেক্ষেত্রে ক্লোজ করে দেওয়া ট্যাবসমুহ দ্রুত ওপেন করতে Ctrl + Shift + T কি একসাথে চাপুন।

২৪। Ctrl + Alt + Del: একটানা বেশিক্ষণ পিসি ব্যবহার করার কারনে প্রায়ই আমাদের পিসি হ্যাং হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে পিসি হ্যাং হলে Ctrl + Alt + Del কি একসাথে চেপে উইন্ডোজের Task Manager প্রোগ্রাম চালু করার অপশন পাবেন। সেখান থেকে হ্যাং হওয়া অ্যাপ বন্ধ করা যাবে। এছাড়া পিসি লক করা, বন্ধ করা কিংবা সাইনআউটের অপশনও পাওয়া যাবে।

২৫। Alt + Tab: এক অ্যাপ থেকে অন্য অ্যাপে প্রবেশ করার জন্য আমরা বরাবরের মতোই বারবার মাউস দিয়ে ক্লিক করে থাকি। এখন থেকে মাউস ব্যবহার না করে খুব সহজেই Alt + Tab কি একসাথে চেপে চালু থাকা এক অ্যাপ থেকে অন্য অ্যাপে প্রবেশ করা যাবে।

২৬। Alt + F4: যেকোনো অ্যাপ বা উইন্ডো বন্ধ করার জন্য আমরা অ্যাপ বা উইন্ডোর উপরের রাইট কর্নারে থাকা ক্রস (X) এ ক্লিক করে থাকি। তবে Alt কি ও F4 চাপার মাধ্যমে যেকোনো অ্যাপ ক্লোজ করা যায়।

২৭। F5: আমরা প্রায় সবাই কমবেশি উইন্ডোজ এর রিফ্রেশ ফিচারটি ব্যবহার করে থাকি৷ কিন্তু ডেস্কটপে থাকা অবস্থায় শুধুমাত্র কিবোর্ড এর F5 কি চেপে খুব সহজেই রিফ্রেশ করা যায়। এছাড়াও যেকোনো ইন্টারনেট ব্রাউজারের ট্যাব এ লোড করা ওয়েবসাইট রিলোড করতেও F5 কি ব্যবহার করা যায়।

২৮। F2: আমরা অনেক সময় কম্পিউটারে থাকা বিভিন্ন ফাইল ও ফোল্ডারের নাম পরিবর্তন করে থাকি। খুব সহজে ও দ্রুত কোনো ফাইল বা ফোল্ডারের ওপর একটি ক্লিক করে তারপর F2 বাটন চাপ দিলে ঐ ফাইল বা ফোল্ডারের নাম পরিবর্তন করার অপশন আসবে।


ধন্যবাদ আমাদের Tech Shikun- টেক শিখুন ব্লগের সাথে থাকার জন্য। নিয়মিত প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন আশা করি। আর হ্যাঁ এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে কেমন লেগেছে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন, ধন্যবাদ।

নবীনতর পূর্বতন